নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মতুর্জার উত্তরসূরী হিসেবে এবারই প্রথম কোন সিরিজ ছিল তামিম ইকবালের । সেই সিরিজে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ । আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে উইন্ডিজকে ১২০ রানের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে টাইগাররা । এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হওয়া প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে এবং দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে জয় পায় টাইগাররা।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশকিছু রেকর্ডের জন্ম দিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। তামিম ৬৪, সাকিব আল হাসান ৫১, মুশফিকুর রহিম ৬৪ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত ৬৪ রান করেন। জবাবে ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানেই গুটিয়ে যায় উইন্ডিজ ইনিংস। ইনজুরি কাটিয়ে এ ম্যাচে ফিরেই ঝলক দেখান ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তিনি ৫১ রানে নেন ৩ উইকেট ।
এবারের সিরিজে প্রথমবার আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই শুন্য রানে সাজঘরে ফেরেন লিটন। কিন্তু পরবর্তীতে তরুন নাজমুল হোসেন শান্তও ৩০ বলে ৩ চারে ২০ রান করে আউট হন। শেষদিকে সৌম্য সরকার ৮ বলে ৭ করে রানআউট হয়ে যান। বাংলাদেশের ইনিংসে এ তিনটিই ছোট রানে শেষ হওয়া ইনিংস ।
আজ তামিম-সাকিব তৃতীয় উইকেটে ৯৩ রানের বড় জুটি গড়ে দলকে ভাল একটি ভিত দেন। তামিম প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০০ রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান ক্যারিয়ারের ৪৯তম ফিফটি হাঁকিয়ে। তিনি ৮০ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৬৪ রান করে বিদায় নেন ।
এরপর সাকিব-মুশফিক জুটি ৪৮ রানের জুটি গড়লে বড় সংগ্রহের পথ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। সাকিব ৮১ বলে ৩ চারে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এটি ছিল তার ৪৮তম ফিফটি। এর মাধ্যমে দেশের মাটিতে ৩ ফরমেট মিলিয়ে ৬ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান তিনি তামিম ও মুশফিকের পর তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে। তবে বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরমেট মিলিয়ে ৬ হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের একমাত্র গর্বিত মালিক হয়ে যান এর মাধ্যমে ।
খেলার শেষদিকে মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ ঝড় তোলেন। ৫৮ বলে ৭২ রানের জুটি হয় তাদের। তাদের ব্যাটিংয়ে শেষ ৫ ওভারে ওঠে ৫৭ রান। মুশফিক ৫৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬৪ রান করার পর সাজঘরে ফেরেন। মাহমুদুল্লাহ ছিলেন শেষ পর্যন্ত। তিনি কিওন হার্ডিংকে ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি পূর্ণ করেন। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে তোলে ২৯৭ রান। মাহমুদুল্লাহ ৪৩ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন ।
সাকিব এদিন বল হাতে বেশিক্ষণ বোলিং করতে পারেননি। পঞ্চম ওভারে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। পরিবর্তে বোলিং করতে এসে মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকার ১ উইকেট নেন। এছাড়া মেহেদি হাসান মিরাজ এদিনও তার অফস্পিনে কার্যকর ভূমিকা রেখে ২ উইকেট তুলে নেন ।
অনেকদিন বিরতির পর ফেরা ডানহাতি পেসার তাসকিন দুর্দান্ত বোলিং করেন শুরুতে। পরে তিনিও রেইফারকে সাজঘরে ফেরত পাঠালে ক্যারিবীয়দের ইনিংসে সমাপ্তি ঘটে। যথারীতি লড়াইটা করেছেন শুধু রোভম্যান পাওয়েল। তিনি ৪৯ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৪৭ রানের একটি দ্রুতগতির ইনিংস খেলে আউট হয়ে গেলে হার নিশ্চিত হয়ে যায় উইন্ডিজের ।
স্কোর: বাংলাদেশ ইনিংস- ২৯৭/৬; ৫০ ওভার (তামিম ৬৪, মুশফিক ৬৪, মাহমুদুল্লাহ ৬৪*, সাকিব ৫১, শান্ত ২০; আলজারি ২/৪৮, রেইফার ২/৬১) ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস- ১৭৭/১০; ৪৪.২ ওভার (রোভম্যান ৪৭, এনক্রুমাহ ৩১, রেইফার ২৭; সাইফউদ্দিন ৩/৫১, মিরাজ ২/১৮, মুস্তাফিজ ২/২৪) । বাংলাদেশ ১২০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা॥ মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ) । বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জয়ীর ফলে হোয়াইটওয়াশ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ । সিরিজ সেরা হয় সাকিব আল হাসান ।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply