সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্যাপনের মধ্যেই মিয়ানমারজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৫০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আজ শনিবার ইয়াংগন, মান্দালয়সহ বিভিন্ন শহরে ‘মাথায়, পিঠে গুলিবিদ্ধ’ হওয়ার হুমকি উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসার পর নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর চড়াও হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইয়াংগনে দালা শহরতলীর একটি থানার বাইরে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৪ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাও।
বাণিজ্যিক এ রাজধানীর উত্তর দিকের জেলা ইনসেইনে একটি বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৩ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে স্থানীয় একটি অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের এক খেলোয়াড়ও আছেন বলে জানিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাসিওতে ৩ এবং ইয়াংগনের কাছে বাগো অঞ্চলে ৪ জন নিহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে। উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হোপিন শহরেও এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।
মান্দালয়ে বিভিন্ন ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাও। রক্ত ঝরেছে মান্দালয়ের কাছে অবস্থিত সাগাইং এলাকাসহও আরও কিছু অঞ্চলে।
সব মিলিয়ে শনিবার মিয়ানমারজুড়ে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার নাও। রয়টার্স নিহতের এ সংখ্যা সঠিক কিনা, তা যাচাই করতে পারেনি।
“আজ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জা দিবস। তিনশর বেশি নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন,” একটি অনলাইন ফোরামে এমনটাই বলেছেন ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ড. সাসা।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে মোট নিহতের সংখ্যা এখন ৩৮০ ছুঁইছুঁই। শুক্রবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ৩২৮ এ ছিল বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি)।
শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাজধানী নেপিডোতে সামরিক কুচকাওয়াজে সভাপতিত্ব করার পর মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইং নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যদিও কবের মধ্যে তিনি এ প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন, তার সময়সীমা বলেননি।
“গণতন্ত্রের সুরক্ষায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুরো জাতির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে চায়।
“যে দাবিতে নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে, যার ফলে দেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা বিনষ্ট হচ্ছে সেটা সঠিক দাবি নয়,” বলেছেন তিনি।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কারণ ব্যাখ্যায় হ্লাইং বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির ‘বেআইনী কার্যকলাপের’ কারণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply