চলতি বছর মে মাসের মাঝামাঝিতে মেট্রো রেললাইনে প্রথমবার জাপান থেকে আনা রেল ইঞ্জিন চালিয়ে দেখা হয়।
তবে রবিবার থেকে উড়াল রেল সড়কে মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু করা হয়েছে। ঢাকার উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে পল্লবী পর্যন্ত আপাতত এই রেলের চারটি বগি চলাচল শুরু করেছে। বাকি দুইটি স্টেশন হলো উত্তরা-উত্তর স্টেশন ও উত্তরা সেন্টার। আপাতত ছয়মাস এই পরীক্ষা চলমান থাকবে।
যদিও মেট্রোরেলের ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলার ক্ষমতা থাকবে, তবে আপাতত পারফর্মেন্স টেস্টের অংশ হিসাবে পাঁচ কিলোমিটার গতিতে রেলটি চলবে। এরপর আস্তে আস্তে গতি বাড়ানো হবে। সবশেষে ২৫ কিলোমিটার গতিতে রেলটি চালিয়ে দেখা হবে।
আপাতত জাপানি চালকরা এই রেল চালনা করবেন। যখন জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান (কাওয়াসাকি-তিমসুবিশি কনসোর্টিয়াম) রেলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করবেন, তখন থেকে বাংলাদেশি চালকরা এগুলোর দায়িত্ব নেবেন। এখন চালকদের প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেট্রোরেল চলাচলের ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে ১৯টি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। ফলে বাণিজ্যিকভাবে পুরোপুরি চালু করার আগে এই ১৯টি ধাপ ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, সেটি নিশ্চিত করা হবে।
প্রথম ধাপে পারফর্মেন্স টেস্টের পর ‘ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট’ করা হবে।
এই পরীক্ষায় সব স্টেশনে ঠিক মতো থামছে কিনা, বৈদ্যুতিক সংকেত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা কাজ করছে কিনা, ইত্যাদি বিষয় যাচাই করে দেখা হবে। সেই সময় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত টেস্ট করা হতে পারে। সেই ধাপটিও ছয়মাস চালানো হবে।
এসব পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর রেলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত বলে ধরে নেয়া হবে।
রবিবার মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল উদ্বোধন করার সময় সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার মেট্রোরেল উদ্বোধন করতে চায়।
”আগামী বছর জুনের মধ্যে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে, এরপর কর্ণফুলী সেতুর উদ্বোধন হবে। এবং বছর শেষে ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প মেট্রোরেল তিনি নিজেই উদ্বোধন করবেন,” বলেছেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার উত্তরা থেকে ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল পর্যন্ত পৌছাতে ৩৮ মিনিটের মতো লাগবে।
আজ ঢাকায় সেই আশার বানী শোনা গেলো বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের মুখ থেকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন আজ।
কর্মকর্তার বলছেন, উত্তরা থেকে মিরপুর হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের মোট ১৬ টি স্টেশন থাকবে।
মেট্রোরেল মূলত পল্লবী হয় রোকেয়া সরণি ধরে এগুবে। শাহবাগ, টিএসসি হয়ে চলে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত।
এর মাঝে ঢাকার ব্যস্ত ফার্মগেট সহ মেট্রোরেল থামবে গুরুত্বপূর্ণ সব স্টেশনে।
মেট্রোরেলে ২৪ টি ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় আপ ও ডাউন রুটে ৬০ হাজার যাত্রী আনা নেয়া করতে সক্ষম হবে বলে দাবি করছেন কর্মকর্তারা।
আর বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত কাজ শেষ করার পরিকল্পনা এর পরের বছরের মধ্যে।
প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে জাপানের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা জাইকা দিচ্ছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকার রাস্তায় যানজটে নাকানি চুবানি খেতে হয় শহরের বাসিন্দাদের। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের অভাবে অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। সিএনজি অটোরিকশা চালকদের হাতে জিম্মিও হতে হয়। টাউন সার্ভিসের বাসগুলো প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। কার আগে কে যাবে তা নিয়ে চলে এই অশুভ প্রতিযোগিতা। প্রাণ যায় অনেক পথচারী ও যাত্রীদের। এখন মেট্রোরেল কতটা সুবিধা বয়ে আনবে আর সময় মতো সেটি চালু হবে কিনা সেই অপেক্ষা করছেন ঢাকাবাসীদের অনেকে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply