আজ রাতের মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। মঙ্গলবার দুপুরের পর জাতীয় গ্রিডের পূর্বাঞ্চলীয় সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, আশা করছি, আজ মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই সারা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
আজ দুপুর ২টা ৪ মিনিটে গ্রিডে বিপর্যয় ঘটলে পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে যায় ৷ এতে দেশের অর্ধেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে ৷ তবে গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ জানা যায়নি ৷ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘোড়াশাল, টঙ্গীসহ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে ৷ সীমিত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, বিকল্প উপায়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন -হাসপাতাল, সরকারি জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ৷
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যায়ের কারণে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুলতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে গ্রাহকদের।
ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো জেনারেটর দিয়ে কার্যক্রম সচল রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু অনেক ব্যাংকের বুথে জেনারেটর বা ইউপিএস সুবিধা না থাকায় কার্ড সেবা বন্ধ হয়ে যায়।
যেসব বুথে ইউপিএস সুবিধা ছিল সেগুলোও ঘণ্টা দুয়েক পর অচল হয়ে যায়। বিকালের পর মহাখালী, কারওয়ান বাজার, গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বন্ধ পাওয়া যায় অধিকাংশ এটিএম বুথ। ফলে জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে এসে ফিরে যেতে হয় গ্রাহকদের।
সন্ধ্যায় মহাখালী-গুলশান সংযোগ সড়কে থাকা ট্রাস্ট, ইবিএল, প্রিমিয়ার ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এটিএম বুথ ও নগদ টাকা জমা নেওয়ার সিআরএম (ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন) বন্ধ দেখা যায়।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় টাকা আপাতত কোনো সেবা পাওয়া সম্ভব না।
বিভিন্ন ব্যাংক শাখার লাগোয়া এটিএম বুথ ও শপিং মলে থাকা এটিএম বুথ জেনারেটরের মাধ্যমে সচল রাখা গেলেও এর বাইরে রাস্তায় থাকা অধিকাংশ বুথে সে সুযোগ ছিল না।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের অর্ধেক অঞ্চলের বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ ফেরাতে কাজ শুরু করেন।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গভবনের বিদ্যুৎ লাইনের সঙ্গে যুক্ত মানিকনগর সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হয়। ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরতে থাকে এবং রাত সোয়া ১০টার দিকে অধিকাংশ এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
এই সময়ে বাসাবাড়িতে থাকা মানুষ পানির কষ্টেও পড়েছে। হাসপাতালে কষ্ট বেড়েছে রোগীদের। মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় দোকানে বা সুপার শপে অনেক ব্যাংকের পিওএস মেশিনে লেনদেনে বিঘ্ন ঘটেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের মোট এটিএম বুথ রয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার। আর প্রতিমাসে এসব বুথে লেনদেন হয় ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply