ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট, গবেষণাকেন্দ্র ও বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠান মেলায় তাদের উদ্ভাবন, গবেষণা ও প্রকাশনা তুলে ধরছে।
প্রতিষ্ঠার শতবর্ষে এসে প্রথমবারের মতো ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দুই দিনব্যাপী এই মেলার উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত এ মেলা শেষ হবে রোববার। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট, গবেষণাকেন্দ্র ও বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠান ১০০টিরও বেশি স্টল ও প্যাভিলিয়নে তাদের উদ্ভাবন, গবেষণা ও প্রকাশনা তুলে ধরছে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ বলেন, “আমরা দেশের বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকি গবেষক বা কনসাল্টেন্ট্রের জন্য, সবসময় বিদেশিদের প্রাধ্যান্য দিয়ে থাকি। আমরা মনে হয় সেই যোগ্যতা আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের আছে। তারা বিশ্বমানের গবেষণা কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, যার ফলে বিশাল জনসংখ্যার দেশ ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ’ বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “কারণ কৃষি ক্ষেত্রে আমরা নতুন নতুন আঙ্গিকে উদ্ভাবন করতে পারছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইনস্টিটিউট চামড়া শিল্প নিয়ে কাজ করছে। চামড়ার বিশ্ব বাজার আছে। আমরা আমাদের রপ্তানিকে বহুমুখীর করার কথা ভাবছি। এজন্য প্রচুর গবেষণা দরকার।”
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী মানবসম্পদ তৈরিতে বিশ্ববিদ্যায়গুলোকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আজকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসন্ন। সেখানে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। আমাদের সুদক্ষ কর্মীবাহিনী তৈরি করতে হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই অবকাঠামোগত মহপরিকল্পনার পাশাপাশি একাডেমিক মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
গবেষণার অর্থ সংস্থানের জন্য শুধু সরকারের বাজেটের উপর নির্ভর না করে বহুমুখী অর্থ সংস্থানের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা স্বায়ত্তশাসিত এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অর্থ সংস্থান দিতে সব সময় প্রস্তুত আছি। শুধু সরকারি বরাদ্দ নয়, গবেষণা-প্রকাশনার জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বাড়ানো দরকার। নলেজ বেইজড ইকোনমিতে ট্রান্সফর্মেশরেন জন্য প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রকাশনা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার বিকাল ৩টায় মেলায় কলা, বিজ্ঞান, আইন, ব্যবসায় শিক্ষা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ পৃথক পৃথক গবেষণা-প্রকাশনা উপস্থাপন করবে।
রোববার সমাপনী দিনে সকাল ১০টায় জীববিজ্ঞান, ফার্মেসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং চারুকলা অনুষদের পৃথক উপস্থাপনা থাকবে। এ ছাড়া সব ইনস্টিটিউটের পক্ষে একটি এবং গবেষণাকেন্দ্রের পক্ষে একটি উপস্থাপনা থাকবে।
দু’দিনব্যাপী গবেষণা-প্রকাশনা মেলা আজ রোববার (২৩ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শেষ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গবেষণা-প্রকাশনা মেলা সফলভাবে আয়োজনের ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সংস্কৃতি তৈরি এবং নতুন শতকে বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই মেলা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উপাচার্য বলেন, প্রতিবছর নিয়মিতভাবে এই মেলা আয়োজনের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত কবিতা, রচনা ও ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা এবং প্রত্যেক জার্নালের বিশেষ সংখ্যার শ্রেষ্ঠ আর্টিকেল লেখককে সনদ, ক্রেস্ট ও প্রাইজ মানি দেওয়া হয়। এছাড়া প্রত্যেক অনুষদ, ইনস্টিটিউট এবং সেন্টারের পোস্টার থেকে নির্বাচিত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পোস্টার উপস্থাপনকারীকেও পুরস্কার দেওয়া হয়।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply