ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে (পুরনো বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ) দলের লাখো নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল।
সম্মেলন উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লাল-সবুজ টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে মিছিল নিয়ে সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। দুপুর ২ টায় সম্মেলন শুরু হবার কথা থাকলেও বেলা ১২ টার মধ্যেই সম্মেলন স্থলে ঢাকা জেলার নেতা কর্মীদের জন্য রাখা ২২ হাজার চেয়ার ভরে যায়। পরবর্তিতে জেলার বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়ন থেকে আগত নেতাকর্মীরা মাঠের আশে পাশের রাস্তায় অবস্থান নেন। পুরো সম্মেলন স্থল উপস্থিত লাখো নেতাকর্মীদের ম্লোগানে মুখিরিত হয়ে উঠে। সম্মেলনে আসা নেতাকর্মীদের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি দেখা গেছে।
দুপুর ২টার পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি করা হয় সম্মেলনের মঞ্চ। ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে যায় সম্মেলন স্থল। তৈরি হয় শুভেচ্ছা তোরণ। ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলন ৮ বছর পর হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করে।
এদিকে সম্মেলন সফল করতে জেলার ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলাসহ সাতটি ইউনিটের নেতাকর্মীরা কাজ করেন।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কত লোক হয়েছে, তার খবর নিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেবের খবর কী? তিনি টাকার গুদামে ঘুমিয়ে আছেন। ঢাকা জেলা সম্মেলনে কত লোক হয়েছে, খবর নেন। মিটিংএ যদি থাকুন, ঢাকার ছবি দেখুন। আমাদেরটা দেখুন। চট্টগ্রামের পলোগ্রাাউন্ডে শেখ হাসিনা যাবে দশ লাখ লোক দেখাবো।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির সম্মেলনে কয়েকজন লোক হয়েছে তা আমরা দেখেছি। আজকে শুধু ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের এ সন্মেলনে কতলোকজন হয়েছে, তা আপনারা দেখে যান। এখানে আমাদের নেত্রী নেই। তারপরও কত লোক হয়েছে। তিনি বলেন, রংপুরে একটা সমাবেশ হচ্ছে। কত রঙ্গ দেখাইলা রে জাদু। রঙ বেরঙ্গের নাটক। তিনদিন আগে রংপুর এসে সবাই শুয়ে আছে। বাড়ীর ছাদের উপর, গুদাম ঘরে শুয়ে আছে। ফখরুল সাহেবের খবর কী? আমাদের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ছবি দেখুন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে, খেলা হবে, আন্দোলনে, নির্বাচনে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, ভুয়া ভোটারদের বানানোর বিরুদ্ধে খেলা হবে। টাকা উড়ে মহল্লায়, টাকার খেলা হবে না। সাম্প্রদায়িক, খুনির সরকারের হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, স্বাধীণতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও নিরাপদ নয়। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আবারও ভোট চুরি করবে, খুন করবে। গণতন্ত্র হরণ করবে। এই বিএনপি। বিএনপির সাথে জনগণ নেই। যতই নাচানাচি করেন, লাফালাফি করেন, দুবাই থেকে টাকা আসে। খোঁজ পেয়েছি। ব্যবস্থা হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে, তারা যত চেচামেচিই করুক, যত সমাবেশ করুক, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারবে না। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে দক্ষ প্রসাশকের নাম শেখ হাসিনা। সবচেয়ে সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। সবচেয়ে সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা। আমাদের ক্রাইসিস ম্যানেজার হচ্ছেন শেখ হাসিনা।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমানের পরিচালনায় সম্মেলনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এ সময় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, দূর্যোগ ব্যবস্থা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, আইন সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, মহিলা সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছার, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী ও আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply