চরম সংকটের মুখে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা। বিদেশি ঋণে জর্জরিত দেশটি। আর এর সঙ্গে দেশটিতে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পাকিস্তানে রাতারাতি ব্যাপকভাবে বেড়েছে পাঁচ বছরের ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপস (সিডিএস)। মূলত এই বীমা চুক্তি খেলাপি হওয়ার বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীকে রক্ষা করে এবং এটি বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে।
দ্য ডনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গবেষণা সংস্থা আরিফ হাবিব লিমিটেডের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বুধবার ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপস বা সিডিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫.৫ শতাংশে; যা এক দিন আগেই ছিল ৫৬.২ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে পাকিস্তান এবং আইএমএফের মধ্যে আলোচনার সময়সূচি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে, তবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। মিডিয়া রিপোর্টে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, নভেম্বরের শুরুতে যে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল তা চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর বিক্রয় কর সামঞ্জস্যের প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং চলতি বছরের শুরুতে পুনরুজ্জীবিত করা ঋণ চুক্তির অধীনে প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরই আবার আলোচনা শুরু হবে।
কারণ বাজার, দাতা, বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর কাছ থেকে আরও বেশি ঋণ নিয়ে খেলাপি বা দেউলিয়া হওয়া এড়াতে লড়াই করছে পাকিস্তানের অর্থনীতি।
দ্য ডন বলছে, পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা মেটাতে চলতি অর্থবছরে শেহবাজ সরকারের তিন হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। অন্যদিকে আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাকি অর্থবছরে এখনো প্রায় দুই হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন পাকিস্তানের।
অবশ্য পাকিস্তান এখনো আইএমএফের কর্মসূচিতে রয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক থেকে অর্থপ্রবাহ পেতে সক্ষম হবে পাকিস্তান।
এছাড়া পাকিস্তান চলতি অর্থবছরে এক লাখ ৫০ হাজার কোটি রুপি রাজস্ব ঘাটতি কমিয়ে আনতে আইএমএফকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ঘাটতি আরও বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply