প্রথমার্ধে চমৎকার ফুটবল খেলে এগিয়ে যায় জাপান। সেই ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল ক্রোয়েশিয়া। দুই দলের লড়াই গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে চাপ নিতে পারল না এশিয়ার দেশটি। তিনটি দারুণ সেভে ব্যবধান গড়ে দিলেন দমিনিক লিভাকভিচ। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল ক্রোয়াটরা।
আল ওয়াকরার আল জানোব স্টেডিয়ামে গতকাল সোমবার শেষ ষোলোর ম্যাচে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। পরে টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে জিতে উল্লাসে মাতে গত আসরের রানার্সআপরা।
পেনাল্টি শুটআউটে জাপানের প্রথম চার শটের তিনটি মিস করেন তাকুমি মিনামিনো, কাওরো মিতোমা ও মায়া ইয়োশিদা। তাদের কারও শটেই জোর ছিল না তেমন। সবগুলিই ঠেকিয়ে দেন লিভাকভিচ।
ক্রোয়েশিয়ার প্রথম তিন শটের দুটি খুঁজে পায় ঠিকানা, একটি লাগে পোস্টে। আর চতুর্থ শটে মারিও পাসালিচ বল জালে পাঠাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে ক্রোয়াটরা।
এই নিয়ে চারবার বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল জাপান। প্রথমবার কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলার অপেক্ষা আরও বেড়ে গেল তাদের।
২০১০ আসরেও শেষ ষোলোয় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরেছিল তারা। এ ছাড়া ২০০২ সালে তুরস্ক ও গত আসরে বেলজিয়ামের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছিল দলটি।
আর ক্রোয়েশিয়া বিশ্বকাপে তাদের সবশেষ তিনটি টাইব্রেকারের সবগুলোই জিতল। গত আসরে শেষ ষোলোয় ডেনমার্ক ও কোয়ার্টার-ফাইনালে রাশিয়াকে হারিয়েছিল তারা।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে বড় সুযোগ পেয়ে যায় জাপান। ওয়াতারু এনদোর ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে ডিফেন্ডার শোগো তানিগুচির হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
প্রতিপক্ষের ভুলে নবম মিনিটে সুযোগ আসে ক্রোয়েশিয়ার সামনে। জাপানের ডিফেন্ডার তাকেহিরো তোমিইয়াসু বলের নিয়ন্ত্রণ হারালে পেয়ে যান ইভান পেরিসিচ। বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক শুইচি গোন্দা।
গ্রুপ পর্বে জার্মানি ও স্পেনকে হারিয়ে আসা জাপান ত্রয়োদশ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পায়। ডান দিক থেকে বক্সে দারুণ বল বাড়ান জুনিয়া ইতো। ছুটে গিয়ে স্লাইডে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি ফরোয়ার্ড দাইজেন মায়েদা।
প্রতি-আক্রমণে ৪০তম মিনিটে আবার সুযোগ পায় জাপান। বক্সের ভেতর দুরূহ কোণ থেকে উড়িয়ে মারেন দাইচি কামাদা।
বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডে দাভোর সুকেরের পাশে বসলেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। দুজনেরই সমান ৬টি করে গোল।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের বাকি সময়ে আর পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউ। আসরে প্রথমবার নকআউটের কোনো ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।
সেখানে প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভালো একটি সুযোগ তৈরি করে জাপান। নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে ক্রোয়েশিয়ার বক্সের সামনে গিয়ে জোরাল শট নেন কাওরো মিতোমা, যদিও সরাসরি গোলরক্ষকের কাছে যায় বল।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে সবচেয়ে বড় সুযোগটা পান ক্রোয়েশিয়ার লভরো মাইয়ের। বক্সের সামনে ভালো পজিশনে থেকে বাইরে শট নেন তিনি। তাতে টাইব্রেকারের অগ্নি পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে যায় দুই দল। সেখানে লিভাকভিচের বীরত্বে উল্লাসে মাতল ক্রোয়েশিয়া। অপরদিকে এশিয়ার টাইগারখ্যাত জাপানের এই পরাজয়ে জাপানের পাশাপাশি এশিয়ার অন্যান্য দেশের জাপানের সমর্থকরা হতাশ হন।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply