তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ২৩০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। ওই দুই দেশে কয়েকশ ভবন ধসে পড়েছে। খবরটি সিএনএনের।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের কাছে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পটিতে প্রতিবেশী সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন এবং সাইপ্রাসও কেঁপে ওঠে।
তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এক হাজার তিন শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। উভয় দেশে কয়েকশ ভবন ধসে পড়েছে। এতে আহত হয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। অসংখ্য মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সোমবার ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তুরস্কে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর অন্তত ২০টি আফটার শক অনুভূত হয়েছে, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৬। তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহর থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্প আশপাশের দেশগুলোতে, বিশেষ করে লেবানন, সাইপ্রাস, ইসরাইল, ইতালিতে অনুভূত হয়েছে। বিবিসি বলছে, ইতালিতে প্রথমে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর পরই ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারীদের পাঠানো হয়। আশা করছি, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুতই এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারব। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তুর্কি সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, বিগত ৮০ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেনি তুরস্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে গাজিয়ানটেপ শহরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। অবশ্য তুকি কর্তৃপক্ষ বলেছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪।
ভয়াবহ এ ভূমিকম্পের ফলে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন অনেক মানুষ। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। ভূমিকম্পে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ বিভিন্ন শহর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলও কেঁপে ওঠে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের ফলে ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে অনেক মানুষ আটকা পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপে হন্যে হয়ে স্বজনদের খুঁজছেন মানুষ। কেউবা আহতদের উদ্ধারের পর ছুটছেন হাসপাতালের পথে। হাসপাতাল ও ধসে পড়া ভবনগুলোর সামনে স্বজনদের কান্না আর আহাজারি যেন থামছেই না।
তুরস্কের সীমান্তবর্তী দেশ সিরিয়াতেও আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প। উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। সেখানেও ভবন ধসে অনেকের আটকা পড়ার খবর এসেছে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply