প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা স্যার কেয়ার স্টারমারকে ৪ জুলাইয়ের নির্বাচনে তার দলের ঐতিহাসিক বিজয়লাভ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, “এই দ্ব্যর্থহীন ম্যান্ডেট আপনার দেশকে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি জোরদার করার জন্য আপনার নেতৃত্বের প্রতি ব্রিটিশ জনগণের আস্থার সুস্পষ্ট প্রতিফলন।”
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন এই চিঠিটি যুক্তরাজ্যের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে।
এ উপলক্ষে শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় লেবার পার্টি ও দলের আইকনিক নেতা স্যার হ্যারল্ড উইলসন, টমাস উইলিয়ামস সিকে ও লর্ড পিটার শোরের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার দল আওয়ামী লীগের স্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন যা প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল আকাঙ্খার অভিন্ন মূল্যবোধের উপর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ককে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর গড়ে তুলেছে।
তিনি বলেন, “আমার সরকার আমাদের দুই কমনওয়েলথ দেশের পারস্পরিক স্বার্থে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জলবায়ু ও কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আপনার সক্ষম স্টুয়ার্ডশিপের অধীনে লেবার পার্টি সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ।”
তিনি আরো বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, একসাথে আমরা আমাদের দুই দেশের কল্যাণে ৭ লাখের বেশি প্রাণবন্ত ও উদ্যোগী বাংলাদেশী-ব্রিটিশ প্রবাসীদের অমূল্য অবদানকে কাজে লাগানোর প্রয়াস চালিয়ে যাব।”
তিনি যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে তার সুস্বাস্থ্য, সুখ ও সাফল্য এবং যুক্তরাজ্যের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ব্রিটেনে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টির বিশাল জয়ে চার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীও জয় পেলেন। বিবিসি
হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেট থেকে চতুর্থবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। এবারের নির্বাচনে ২৩,৪৩২ ভোট (৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ) পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ প্রার্থী ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮,৪৬২ ভোট।
নির্বাচনে ১৮৫৩৫ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো হাউজ অব কমন্সে বসতে যাচ্ছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আপসানা বেগম। যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে পপলার এন্ড লাইম হাউজ আসন থেকে লড়েছিলেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রীন পার্টির নাটালি পেয়েছেন ৫৯৭৫ ভোট। আপসানার সাবেক স্বামী অপর ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রার্থী এহতেশামুল হক পেয়েছেন ৪৫৫৪ ভোট।
লেবার পার্টির হয়ে দাপুটে জয় পেয়েছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হকও। ২৮১৩২ ভোট পেয়ে ইলিং সেন্ট্রাল এবং অ্যাক্টনে তার আসনটি ধরে রেখেছেন তিনি। রূপার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ প্রার্থী জুলিয়ান গ্যালান্ট পেয়েছেন ১৪৮৩২ ভোট।
হাউজ অব কমন্সের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিনিধি রুশনারা আলীও জিতেছেন বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে। লেবার পার্টির হয়ে ৪৪ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে রুশনারা এক রকম উড়িয়ে দিয়েছেন কনজারভেটিভদের প্রতিনিধি নিকোলাস স্টোভল্ডকে। রুশনারার বিপরীতে দাঁড়িয়ে মাত্র ৬ হাজার ৫২৮ ভোট পড়েছে তার ঝুলিতে।
ব্রিটেনে এবারের সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবারের নির্বাচনে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply