শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে পুরনো সব দ্বন্দ্ব মেটানোর প্রস্তাব দিয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সম্প্রতি এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সরকার পতনের পর চেয়ারপারসনও বলেছেন- আমরা প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আমরা সৌহার্দ্য, ভালোবাসা এবং সুসম্পর্কের রাজনীতি করতে চাই। কিন্তু একই সময়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি একটা বড় বিষয়। আমরা যে কাজগুলো করেছি জনগণ তো তার জন্য আমাদের বিচার করবে। আজকে আওয়ামী লীগকে তার গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিকে কিভাবে তারা ধ্বংস করেছে, তার জন্য তাকে তো জবাবদিহি করতে হবে। তারা জবাবদিহি করে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। আমরা বিশ্বাস করি- যেকোনো দলের যেকোনো ব্যক্তির রাজনীতি করার অধিকার আছে, সেভাবে করবে।
এর আগে বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহ প্রকাশ করে গত ৮ আগস্ট জয় রয়টার্সকে বলেন, খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেছেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে, সেগুলো মনে রাখার প্রয়োজন নেই। জয়ের এমন বক্তব্যে খুশি হয়েছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা অতীত ভুলে যাই। আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ না করি। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, সেটি ঐকমত্যের সরকার হোক বা না হোক।
গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের জন্য বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক জানিয়ে জয় আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমরা বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই এটি নিশ্চিত করার জন্য যে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। রাজনীতি ও আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি। আমরা নানা ইস্যুতে তর্ক করতে পারি। আমরা কোনো বিষয়ে একমত না-ও হতে পারি। তবে ভিন্নমত পোষণের অধিকারের প্রতি আমাদের একমত থাকতে হবে। আর আমরা সব সময়ই আপস করার উপায়ও খুঁজে বের করতে পারি।
এসব বিষয় নিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বিএনপি কখনো মানুষের বিপক্ষে কিছু করেনি। দেশ চালাতে গেলে কিছু ভুল হয়, কিন্তু সেই ভুল দেশ ও মানুষকে ক্ষতি করেনি। মিডিয়ার যে স্বাধীনতা সেটা বিএনপি দিয়েছে, সংসদীয় গণতন্ত্র, মুক্তবাজার অর্থনীতি সেটা বিএনপি দিয়েছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। সেই বিষয়কে গুরুত্ব না দিয়ে তখনকার হাওয়া ভবনের কথা বলে আয়নাঘরের সঙ্গে তাকে তুলনা করা হয়। হাওয়া ভবন একটা ব্যক্তিগত অফিস ছিল, যা দেশের অর্থনীতি, রাজনীতির কোনো ক্ষতি করেনি। এ নিয়ে একটা প্রজেকশন করার চেষ্টা করা হয়। এটা একটা ষড়যন্ত্র। একটা দলকে হেয় করার জন্য, তার অর্জনকে খাটো করার জন্য। নির্বাচন হোক- তাহলে জনগণই বেছে নেবে কোন দলটা ভালো কোন দলটা ভালো না, কোন নেতা খারাপ, নির্বাচনেই প্রমাণ হবে। কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া- এটা করলে ভালো হবে, ওটা করলে ভালো হবে- সেটা নির্বাচনের মাধ্যমেই ঠিক হোক।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply