বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন

মনিকা-ঋতুপর্ণার গোলে আবারও সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫১ বার দর্শন

উন্মাতাল ভক্ত-সমর্থকে ঠাসা গ্যালারি, অপূর্ণতা মুছে ফেলার স্বপ্ন নিয়ে নামল নেপাল। শুরু থেকেই ইঙ্গিত মিলল জমজমাট এক লড়াইয়ের। দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষকে স্তব্ধ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিলেন মনিকা চাকমা। পাল্টা আঘাত হানতে নেপাল সময় নিল মাত্র চার মিনিট! শেষ দিকে ঋতুপর্ণা চাকমার দুর্দান্ত এক গোলে ফের পিছিয়ে পড়ল নেপাল। এরপর আর পথ খুঁজে পেল না তারা। রোমাঞ্চের নানা বাঁক পেরিয়ে বাংলাদেশের তরি ভিড়ল জয়ের বন্দরে।

উইমেন’স সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট ধরে রাখার উচ্ছ্বাসে মাতল বাংলাদেশ। কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে বুধবার ফাইনালে ২-১ গোলে জিতল পিটার জেমস বাটলারের দল।

৫২তম মিনিটে মনিকা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার পর স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান আমিশা। ৮১তম মিনিটে ঋতুপর্ণার গোল গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।

দুই বছর আগে এই মাঠেই, এই নেপালকে হারিয়েই শিরোপা উৎসব করেছিল বাংলাদেশ। সেখানেই আরও একবার স্বপ্ন ভাঙার বেদনায় পুড়ল নেপাল।

একটি পরিবর্তন এনে সেরা একাদশ সাজান বাংলাদেশ কোচ বাটলার। পায়ের চোট কাটিয়ে ফেরেন শামসুন্নাহার জুনিয়র, তাতে বেঞ্চে জায়গা হয় সাগরিকার। গতবারের ফাইনালে দুর্দান্ত এক গোলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছিলেন এই শামসুন্নাহার।

ভারত ম্যাচে লাল কার্ড দেখা রেখা পোডেলকে ফাইনালে পায়নি নেপাল। ৭ গোল করা এই ফরোয়ার্ডের অনুপস্থিতিতে আক্রমণভাগের দায়িত্ব ওঠে সাবিত্রা ভান্ডারির কাঁধে। প্রথমার্ধে ফরাসি লিগে খেলা এই তারকাকে কড়া পাহারায় রাখেন আফিদা খন্দকার ও শিউলি আজিম।

ম্যাচের প্রথম আক্রমণটি শাণায় বাংলাদেশ, দ্বিতীয় মিনিটে; কিন্তু তহুরার শট যায় বাইরে। পরের মিনিটেই আচমকা দারুণ একটা সুযোগ আসে, সেটা নষ্ট হয় ভাগ্যের ফেরে। গীতা রানী ভুল পাসে বল তুলে দিয়েছিলেন তহুরার পায়ে, তার শট ক্রসবারে প্রতিহত হয়। ফিরতি বল পেয়ে হেডে চেষ্টা করেন এই ফরোয়ার্ড, এবার গোলরক্ষকের গ্লাভসে জমে যায় বল।

পরক্ষণেই সতীর্থের ব্যাকপাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক রূপনা চাকমা, যদিও হয়নি বড় কোনো বিপদ। তবে এই চার মিনিটের খেলায় একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায়, স্নায়ুর চাপ পেয়ে বসেছে দুই দলকেই।

দশম মিনিটে ভাগ্যের ছোঁয়া পায় বাংলাদেশও। সাবিত্রার পাস ধরে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন আমিশা কারকি, কিন্তু লাফিয়ে ওঠা রূপনাকে ফাঁকি দিয়ে বল ক্রসবার কাঁপায়। একটু পরই মাঝমাঠে এসে হঠাৎ বসে পড়েন সাবিত্রা, পরে তিনি দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ায় স্বস্তি ফেরে স্বাগতিক শিবিরে।

মাঝমাঠে আলো ছড়ানো মনিকাকে কড়া ট্যাকল করায় আমিতা জাইসিকে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।

২৮তম মিনিটে সাবিত্রার থ্রু পাস দূরের পোস্টে ফাঁকায় পেলেও শট নিতে দেরি করেন আমিশা। শিউলি ছুটে গিয়ে বিপদমুক্ত করেন দলকে।

দুই মিনিট পর গোলরক্ষক আঞ্জিলা পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে ফিস্ট করলে বল চলে যায় মনিকার পায়ে। তাড়াহুড়ো করে নেওয়া এই মিডফিল্ডারের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। হতাশায় মুখ লুকান মনিকা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নেপালের গ্যালারি স্তব্ধ হয়ে যায়। ৫২তম মিনিটে সাবিনার পাস ক্লিয়ার করতে পারেননি ডিফেন্ডাররা। গোলমুখের জটলার ভেতর থেকে মনিকা নিখুঁত টোকায় খুঁজে নেন জাল। বাংলাদেশের ডাগআউট নেচে ওঠে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে।

অবশ্য গ্যালারির চিত্র পাল্টে যায় খানিক বাদেই। সতীর্থের থ্রু পাস ধরে আমিশা সহজেই রূপনাকে পরাস্ত করলে উল্লাসে মাতে নেপাল।

৬১তম মিনিটে আফিদার পাহারা ভেদ করে প্রথম বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন সাবিত্রা। তবে এই ফরোয়ার্ডের শট দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। ছয় মিনিট পর গোলরক্ষক আঞ্জিলার দারুণ সেভে গোল পায়নি বাংলাদেশ; বক্সের বেশ বাইরে থেকে মারিয়ার বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে আটকান তিনি।

৭৬তম মিনিটে আমিশার বদলি নামেন অনিতা বাসতেন। এরপরই ঋতুপর্ণা চাকমার আড়াআড়ি ক্রসে গোলমুখ থেকে ঠিকঠাক হেড নিতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র।

চার মিনিট পর আসে ব্যবধান গড়ে দেওয়া চমৎকার গোলটি। বাঁ দিকের বাইলাইনের একটু ওপর থেকে কার্যত ক্রস বাড়িয়েছিলেন ঋতুপর্ণা, বল হাওয়ায় ভেসে, লাফিয়ে ওঠা আঞ্জিলা থুম্বাপো সুব্বাকে ফাঁকি দিয়ে লুটোপুটি খায় জালে। এরপরই অধিনায়ক সাবিনাকে তুলে স্বপ্না রানীকে নামান বাটলার।

দ্বিতীয়বার পিছিয়ে পড়ার পর নেপাল যেন খেই হারিয়ে ফেলে। সমতায় ফেরার চেষ্টায় উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি তারা।

শেষ বাঁশি বাজতেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উৎসব শুরু হয় বাংলাদেশ শিবিরে। তাদের এই উল্লাসের মাঝে হয়তো লুকিয়ে আছে স্বস্তির পরশও।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

Address

Registered Office: 44/1 North Dhanmondi (5th Floor) Kalabagan, Dhaka- 1205, Bangladesh Email: kalabaganbarta@gmail.com / admin@kalabaganbarta.com Telephone: +88-02-58154100 Editorial Office: Karim Tower 44/7-A&B, West Panthapath, Kalabagan, Dhaka-1205

Correspondences

USA: Mainul Haq (Atlanta) Kolkata: Sunirmal Chakraborty Mobile: +91-8017854521 Ashim Kumar Ghosh Address: 3D K.P Roy Lane, Tollygunge Phari Kolkata- 700 033, WB, India Mobile: +91-9874891187                                                                                                           S. M. Ashikur Rahman (Technical Adviser)
Author: Masud Karim © All rights reserved 2020. Kalabaganbarta

Design & Developed By: RTD IT ZONE