ফ্যাসিবাদ যেকোনো সময় ফিরে আসতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন কতগুলো কাজ করছি, যে কাজগুলোর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার আশঙ্কা অনেক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ যেকোনো সময় আবার ফিরে আসতে পারে। আমরা সেই রাস্তা যেন তৈরি করে না দেই। আজকে আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন কতগুলো কাজ করছি, যে কাজগুলোর মধ্য দিয়ে কিন্তু ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।
আজ (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সেমিনার কক্ষে জাতীয় কবিতা পরিষদের উদ্যোগে ‘রাষ্ট্র পুণর্গঠনে লেখক শিল্পীদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- আমাদের কবি লেখক শিল্পীরা জাতি পুণর্গঠনে একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে লেখকরা কথা বলতে পারেন নি। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের ক্ষেত্রে লেখক শিল্পীরা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদ রুখতে হবে সেখানে সংস্কারের জন্য মত দেবেন লেখক শিল্পীরা।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্য’র সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সাবেক সাংসদ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, লেখক ও সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, কবি ও সাংবাদিক হাসান হাফিজ, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, লেখক ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান, গণসংহতি আন্দোলন’র প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সাংবাদিক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ, ত্রৈমাসিক হালখাতা’র সম্পাদক কবি শওকত হোসেন।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন- জাতীয় কবিতা পরিষদের সদস্য সচিব কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন। স্বাগত বক্তব্য দেন এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন- জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন যুগ্ম আহ্বায়ক কবি শাহীন রেজা।
সলিমুল্লাহ খান বলেন- ‘রাষ্ট্র পুণর্গঠনের ক্ষেত্রে প্রতিবিপ্লব সংগঠিত হতে পারে। সে ব্যাপারে লেখক শিল্পীসহ রাজনীতিকদের সতর্ক থাকতে হবে। জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পুনগঠনের ক্ষেত্রে লেখক শিল্পীদের ভূমিকা গুরত্বপূর্ণ। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হতে পারে না। আমাদের সমাজে রাষ্ট্রে যেন আর কোনো ফ্যাসিস্টদের আগমন না ঘটে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। জন আকাংখার প্রতিফলন না থাকলে রাষ্ট্র সফল হবে না। সার্বভৌমত্ব যেন হুমকির মুখে না পড়ে সে দিকে লেখক শিল্পীদের দৃষ্টি রাখতে হবে।
নূরুল ইসলাম মনি বলেন- একালে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া রাষ্ট্র পুণর্গঠনে ভূমিকা পালন অসম্ভব। লেখক শিল্পীরা সহায়ক শক্তি।
জোনায়েদ সাকি বলেন- রাষ্ট্র পুণর্গঠনের ক্ষেত্রে সংস্কৃতি একটা বড় ভূমিকা রাখে। গত ফ্যাসিস্ট সরকার লেখক শিল্পীদের বড় অংশকে তাবেদার তৈরি করেছিল।
সাইফুল হক বলেন- গত ফ্যাসিস্ট সরকারকে যে সমস্ত লেখক শিল্পীরা ‘না’ বলার সাহস দেখিয়েছে, তাদের শ্রদ্ধা জানাই। আর কোনো লেখক কবি শিল্পীরা যেনো স্বৈরশাসকের দোসর না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন- ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা চাই নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের পথ তৈরীতে সহায়ক হবে লেখক শিল্পীরা। একটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণে লেখক শিল্পীদের সতর্ক থাকতে হবে। এখন কথা বলা যায়। এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নতুন পথ দেখাবে।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন- সংস্কৃতি হলো লক্ষ্য, রাজনীতি হলো মাধ্যম। গত ১৫ বছর ধরে এই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে যে আত্মত্যাগ করেছে জনগণ, তার তুলনা নেই। সংস্কার করবে জনগণ। সেই সুযোগ দিতে হবে। গণ অভ্যুত্থানের অর্জনকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। লেখক শিল্পীদের সোচ্চার হতে হবে। জনগণের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান বলেন- যদি কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার ফিরে আসতে চায়, কবিরাই প্রথম প্রতিহত করবে, কবি শিল্পীরা রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করবে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply