রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন

ছয় বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯৬ বার দর্শন

বোলারদের দারুন নৈপুন্যে ছয় বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ১২৯ রানের পুঁজি নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ রানে জয় পেয়েছিলো টাইগাররা। ফলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এক ম্যাচ বাকী থাকতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করলো লিটন দাসের দল। 

সর্বশেষ ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দলটি। সব মিলিয়ে তৃতীয়বারের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সংক্ষিপ্ত ভার্সনে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। সর্বপ্রথম ২০১১ সালে ঘরের মাঠে এক ম্যাচের সিরিজ জিতেছিলো টাইগাররা। এছাড়াও ২০২২ সালের পর দেশের বাইরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। 

সেন্ট ভিনসেন্টে এবারও টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ ওভারে ১১ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সৌম্য সরকারের সাথে ইনিংস শুরু করেও ব্যর্থতার খোলস থেকে বের হতে পারেননি অফ-ফর্মে থাকা লিটন দাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার আকিল হোসেনের বলে ৩ রানে স্টাম্পড আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 

লিটন ইনিংস শুরু করায় তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি তানজিদ হাসান। ২ রান করে স্পিনার রোস্টন চেজের বলে বোল্ড হন তানজিদ। 

শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে গিয়ে বাংলাদেশের রানের গতি ঠিক রাখতে পারেননি সৌম্য ও আফিফ হোসেনের পরিবর্তে একাদশে ফেরা মেহেদি হাসান মিরাজ। এতে ৫২ বলে ৩৯ রান উঠে বাংলাদেশ ইনিংসে। জুটিতে ৩১ বলে ২৮ রান তুলে ইনিংসের নবম ওভারে বিচ্ছিন্ন হন তারা। টেস্ট মেজাজে খেলে ১টি চারে ১৮ বলে ১১ রানে রান আউট হন সৌম্য।

পরের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন মিরাজও। পেসার আলজারি জোসেফের শর্ট বলে পুল করে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ব্র্যান্ডন কিংকে ক্যাচ দেন মিরাজ। একবার জীবন পেয়ে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ বলে ২৬ রান করেন তিনি।

অষ্টম ও নবমের পর দশম ওভারেও উইকেট হারায় বাংলাদেশ। স্পিনার গুদাকেশ মোতির বলে বোল্ড হবার আগে ৫ রান করেন রিশাদ হোসেন। পরপর তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ১১তম ওভার শেষে টাইগারদের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫২। 

দলকে চাপমুক্ত করতে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন জাকের আলি ও প্রথম ম্যাচে জয়ের নায়ক মাহেদি হাসান। ২০ বলে ২০ রানের জুটি গড়ে থামেন তারা। ১টি চারে ১১ বলে ১১ রানে মোতির বলে বোল্ড হন মাাহেদি। 

উইকেটে সেট হয়ে ১৭তম ওভারের শুরুতে আউট হন জাকেরও। ১টি করে চার-ছক্কায় ২০ বলে ২১ রান করেন জাকের। ৮৮ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে জাকের ফেরার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের উপর চড়াও হন শামীম হোসেন। 

স্লগ ওভারে শামীমের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ইনিংসের শেষ ২৩ বলে উঠে ৪১ রান। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৯ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ২শর বেশি স্ট্রাইক রেটে ২টি করে চার-ছক্কায় ১৭ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করেন শামীম। ১টি বাউন্ডারিতে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন তানজিম হাসান সাকিব। মোতি ২৫ রানে ২ উইকেট নেন। 

১৩০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ২ ওভারে ১৯ রান তুলে ভালো শুরু করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসেই জোড়া উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশ পেসার তাসকিন আহমেদ। ওপেনার ব্র্যান্ডন কিংকে ৮ রানে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান তাসকিন। লিটনকে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে বিদায় নেন তিন নম্বরে নামা আন্দ্রে ফ্লেচার। 

তাসকিনের জোড়া আঘাতের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরেন স্পিনার মাহেদি। নিজের প্রথম ওভারে ১২ রান দেওয়া মাহেদি দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পেয়ে যান। ১২ বলে ১৪ রান করা ওপেনার জনসন চার্লসকে এলবিডব্লিউ করেন মাহেদি। 

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তৃতীয় ওভার করতে এসে নিকোলাস পুরানকে ৫ রানে স্লিপে সৌম্যর ক্যাচ বানান মাহেদি। 

পাওয়ার প্লেতে ৩২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়ে ম্যাচের লাগাম বাংলাদেশের হাতে তুলে দেন হাসান মাহমুদ ও তানজিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকে ৬ রানে হাসান ও রোমারিও শেফার্ডকে শূন্যতে বিদায় দেন তানজিম। ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

সপ্তম উইকেটে ৪৯ বলে ৪৭ রানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচে রাখেন চেজ ও আকিল। ১৭তম ওভারে জোড়া আঘাতে বাংলাদেশের জয়ের পথ তৈরি করেন রিশাদ। 

ওভারের চতুর্থ বলে চেজকে বোল্ড এবং পঞ্চম বলে মোতিকে মাহেদির ক্যাচ বানান রিশাদ। পরের দুই ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকী দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন তানজিম ও তাসকিন। ১৮.৩ ওভারে ১০২ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আকিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন। 

তাসকিন ১৬ রানে ৩টি, মাহেদি-তানজিম ও রিশাদ ২টি করে উইকেট নেন। ১৭ বলে ৩৫ রানের অনবদ্য ইনিংসের সুবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম ম্যাচ সেরা হলেন শামীম। 

আগামী ২০ ডিসেম্বর সেন্ট ভিনসেন্টে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১২৯/৭ (শামীম ৩৫*, মিরাজ ২৬, মোতি ২/২৫)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৮.৩ ওভারে ১০২/১০ (চেজ ৩২, আকিল ৩১, তাসকিন ৩/১৬)। 
ফল : বাংলাদেশ ২৭ রানে জয়ী। 
ম্যাচ সেরা : শামীম হোসেন (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

Address

Registered Office: 44/1 North Dhanmondi (5th Floor) Kalabagan, Dhaka- 1205, Bangladesh Email: kalabaganbarta@gmail.com / admin@kalabaganbarta.com Telephone: +88-02-58154100 Editorial Office: Karim Tower 44/7-A&B, West Panthapath, Kalabagan, Dhaka-1205

Correspondences

USA: Mainul Haq (Atlanta) Kolkata: Sunirmal Chakraborty Mobile: +91-8017854521 Ashim Kumar Ghosh Address: 3D K.P Roy Lane, Tollygunge Phari Kolkata- 700 033, WB, India Mobile: +91-9874891187                                                                                                           S. M. Ashikur Rahman (Technical Adviser)
Author: Masud Karim © All rights reserved 2020. Kalabaganbarta

Design & Developed By: RTD IT ZONE