ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি রোডে প্রকাশ্যে ৯টি বাচ্চাসহ দুই মা কুকুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় অভিনব রায় দিয়েছে আদালত। আসামিকে কারাবাস কিংবা জরিমানার সাজা না দিয়ে ১৫টি কুকুরকে ৩ মাস খাওয়ানোর শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক অপরাজিতা দাস আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে হাজির হয়ে নিজের দোষ স্বীকার করেন জসিম উদ্দিন নামের ওই ব্যক্তি। তবে মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেও আদালত তাকে সাজা না দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে ৩ মাসের প্রবেশনে মুক্তি দেন।
প্রবেশন চলাকালে আসামিকে ১৫টি কুকুরকে খাওয়াতে হবে এবং পশুর যত্ন নিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছেন আদালত। এমনকি কুকুরকে খাওয়ানোর বিষয়ে ছবিসহ প্রতিবেদন তৈরি করে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মাধ্যমে পরবর্তীতে আদালতে দাখিলও করতে বলা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রাণী হত্যার ঘটনায় ফেনীতে এটিই প্রথম কোনো মামলা ছিল। এ মামলায় আসামি জসিম উদ্দিন দোষ স্বীকার করায় আদালত তাকে তিন মাসের প্রবেশন দিয়েছেন। যদি প্রবেশন সময়ের মধ্যে আদালতের দেওয়া শর্ত ভঙ্গ করেন, সেক্ষেত্রে আদালত তাকে আইন অনুযায়ী যেকোনো দণ্ড দিতে পারেন।’
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি সড়কের শান্তি কোম্পানি বাড়ির কালা মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন বিনা কারণে দুই মা কুকুর ও ৯টি বাচ্চাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় ১ এপ্রিল ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এনিম্যাল এইড ফেনীর পরিচালক এনাম হোসেন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে ফেনী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আশেকুর রহমান।
এরপর গত ৯ জুলাই (মঙ্গলবার) পিটিয়ে কুকুর হত্যার ঘটনায় আদালত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন এবং শুনানি শেষে প্রধান অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে আদালতে হাজির করতে সমন জারি করেন।
মামলার বাদী এনাম হোসেন বলেন, ‘অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যে ১১টি কুকুর হত্যা করে আসামিরা প্রাণিকল্যাণ আইন লঙ্ঘন করেছেন। এভাবে অন্যায়ভাবে প্রাণী নিধন বন্ধের জন্যই আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply