‘স্বাধীনতা সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’— এই স্লোগান ধারণ করে ‘জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫’ আয়োজন উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)’র  দোতলায় ‘শহীদ মুনীর চৌধুরী মিলনায়তন’ সংলগ্ন কক্ষে খোলা হয়েছে মাসব্যাপী  উৎসব দপ্তর। 

গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে দপ্তরটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পরিষদের সদস্য সচিব কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক কবি শাহীন রেজা।

আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বর’-এ অনুষ্ঠিত হবে ‘জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫’। কবিদের নাম নিবন্ধনসহ উৎসবের যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ চলবে টিএসসি’র দোতলায় এই দপ্তরে। দপ্তর খোলা থাকবে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত, শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এছাড়াও দূরের কবিদের জন্য অনলাইন নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে। 

এবারের উৎসবে যারা কবিতা পাঠ করবেন তাদের জন্য ‘নিবন্ধন ফি’ অবাধ করে দেয়া হয়েছে। নিবন্ধনকৃত কবিগণ একটি করে স্বরচিত নাতিদীর্ঘ কবিতা পাঠ করতে পারবেন। নিবন্ধনের সময় দু’টি স্বরচিত কবিতার দু’টি করে কপি, এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও এনআইডি/জন্মনিবন্ধনের কপি জমা দিতে হবে। জমাকৃত কবিতা দু’টি থেকে উৎসবে পাঠ করার জন্য একটি কবিতা নির্বাচিত করে দেয়া হবে। পঠিত কবিতাগুলো থেকে উৎসবোত্তর একটি নির্বাচিত কবিতা সংকলন প্রকাশ করা হবে।

ফ্যাসিবাদের পক্ষে, দল-পরিবার-গোষ্ঠী-ব্যক্তিবন্দনা, পতিত স্বৈরাচারের বন্দনা, সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে, দলীয় বা ধর্মীয় উস্কানিমূলক, স্বাধীনতা বিরোধী, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান বিরোধী কবিতা পাঠ করা যাবে না।

দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে ‘কবিতা বিষয়ক সেমিনার’, ‘স্বরচিত কবিতাপাঠ’, ‘কবিতা আবৃত্তি’, ‘কবিতার গান’ ইত্যাদির আয়োজন থাকবে। বিদেশের লেখক ও কবিদের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। আগামী ১১ জানুয়ারি, জাতীয় প্রেস ক্লাবে সকাল ১১টায় সাংবাদিক সম্মেলন মাধ্যমে  আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় কবিতা উৎসবের বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

উদ্বোধন শেষে জাতীয় কবিতা পরিষদের সদস্যরা এক আলোচনা সভার মাধ্যমে অনুষ্ঠিতব্য উৎসবের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেন। রোমান এবং অন্যান্য শিল্পীদে গান পরিবেশন দিয়ে সভা শেষ হয়। 

আজ বিকাল ৪টা থেকে দপ্তরে কবিতা উৎসবে কবিতাপাঠে আগ্রহীদের নাম নিবন্ধন চলছে। পরিষদের সকল সদস্যদের উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

এখানে উল্লেখ্য জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম হলেন কবি মোহন রায়হান। জাতীয় কবিতা পরিষদের পূর্বের কমিটি এই প্রতিষ্ঠানকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেন। বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর উক্ত স্বৈরাচারী মনোভাবাপন্ন পরিচালন পর্ষদের ব্যক্তিগন পালিয়ে গেলে এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কবি মোহন রায়হান জাতীয় কবিতা পরিষদের হাল ধরেন।