বাঙালির প্রাণের আবেগ আর অপেক্ষার ক্ষণ শেষ হতে যাচ্ছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪। এবারের অমর একুশে বইমেলা অধিবর্ষের বইমেলা।
মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদের স্মৃতিতে এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ। স্বাগত বক্তৃতা করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা।
আজ একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এসময় একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বইমেলার সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
অমর একুশে বইমেলার সর্বশেষ প্রস্তুতি বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বইমেলার সদস-সচিব ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম। এসময় মেলা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং বইমেলার সদস্য-সচিব।
এবার অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করবেন।
অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০২৩ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এছাড়া ২০২৩ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ-বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে।
বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিñিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলায় এলাকা জুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত এবং দোয়েল চত্বর থেকে শহউদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চাঁনখারপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত) নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধূলা নিবারণের জন্য পানি ছিটানো এবং প্রতিদিন মশক নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে।
বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮ টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না।
বইমেলার সদস্য-সচিব বলেন, অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতি প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনের আগেই সম্পন্ন হবে। এবারের বইমেলায় একটি অংশের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি জায়গা বর্ধিত করে করা হয়েছে। প্রবেশ পথও বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অঞ্চলের বট গাছের স্থানটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভিতরে নেয়া হয়েছে। বাইরের হকারদের বিশৃঙ্খলা এড়াতে এটি করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এবার অধিবর্ষ, আশাকরি এবারের অমর একুশে বইমেলার সার্বিক প্রস্তুতি ও আয়োজন যথাযথ হবে।
তিনি বলেন, নানা ব্যবস্থাপনাসহ মেলায় আগত দর্শনার্থীদের কথা বিবেচনায় রেখে এবার গণমাধ্যম কর্মীদের (প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক) জন্য দুটি ওয়াটসঅ্যাপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের গাড়ি রাখার স্থান ও গাড়ি প্রবেশের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮ টায় এবং চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply