ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) মুখপাত্র মিও নয়েন্ট জানান, সোমবার ভোরে এক অভিযানে তাদের শীর্ষ নেতাদের আটক করা হয়। পরে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে দেশে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেওয়া হয় বলে খবরে জানানো হয়।
মিয়ানমরে বেসামরিক সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পর এ ঘটনা ঘটল। গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বড় জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তারপর থেকেই দেশটিতে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের শঙ্কা করা হচ্ছিল।
“আমি আমাদের জনগণকে বলতে চাই, চটজলদি প্রতিক্রিয়া জানাবেন না এবং চাই তারা আইন অনুযায়ী কাজ করুক,” বলেন তিনি; এরপর জানান, তিনি নিজেও গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে ধারণা করছেন।
পরে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে। সোমবার ভোররাতের দিকে রাজধানী নেপিডোর ফোন লাইনগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলেও দেশটির সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র উত্তর দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের সিটি হলের সামনে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা রয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনীর। কিন্তু সু চির মতো রাজনৈতিক নেতাকে আটক করার ঘটনা উস্কানিমূলক এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এমন পদক্ষেপ দেশটির সামরিক বাহিনী তীব্র বাঁধার মুখে পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সেনাবাহিনীর লোকজন দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে গেছে বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা দিন দিন জোরালো হচ্ছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়ার পর মিয়ানমারের নেতিবাচক মনোভাব বিশ্বজুড়ে নিন্দিত হচ্ছে। এ অবস্থায় রবিবার (৩১ জানুয়ারি)পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মিয়ানমার কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে ডিজি পর্যায়ের বৈঠক হবে। প্রত্যাবাসন ইস্যুতে জাতিসংঘ পাশে থাকবে। জাতিসংঘ প্রধান আন্তনিও গুতেরেসের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ হয়েছে। বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। এখন ডিজি পর্যায়ের বৈঠক হবে। এরপরই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে জরুরি অবস্থা জারির ফলে সবকিছুই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়ে গেল।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply