রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

ঢাকাকে পর্যটকবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টি করা হচ্ছে : মেয়র তাপস

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩
  • ১৯৯ বার দর্শন

ঢাকা শহরকে একটি পর্যটকবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। 
তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রথম লক্ষ্য হলো- ঢাকার যে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো রয়েছে, সেগুলোকে সংরক্ষণ করা। দ্বিতীয়ত দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা। যাতে পর্যটকরা এখানে এসে ঢাকার ঐতিহ্যকে অনুধাবন করতে পারে, উপভোগ করতে পারে। বহির্বিশ্বে যেভাবে দেখি, ঐতিহ্যবাহী শহরগুলোতে যেমনি পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠে আমরা চাই ঢাকা শহরের পর্যটন শিল্পও সেভাবে গড়ে উঠুক। পর্যটকরা ঢাকামুখী হোক। ঢাকা হোক পর্যটকবান্ধব। সেই লক্ষ্যেই সাতটি ঐতিহ্যের বলয় সৃষ্টি করছি।’
আজ ঐতিহ্য বলয়-৫ এর যাত্রাপথ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এসব কথা বলেন। 
সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে দীর্ঘ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে এসব ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমাদের পরামর্শকরা কাজ করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহ্যের বলয়-৫ চিহ্নিত করেছি। একজন পর্যটক যদি আসে তাহলে সে এই বলয়ের কোন কোন স্থাপনাগুলো দেখবে, কিভাবে সে চলাচল করবে, কি কি উপভোগ করবে? এই বিষয়গুলোর খুঁটিনাটি সবকিছু আমরা নির্ণয় করব এবং তাদের জন্য সে সুযোগ সুবিধাগুলো নিশ্চিত করব। আমরা ৫ নম্বর বলয় নিয়ে আজ থেকে কাজ শুরু করছি। পর্যটকদের সুবিধা আনুযায়ী পর্যটকবান্ধব হিসেবে প্রথমে এই বলয়টাকে সাজাবো। পরবর্তীতে অন্যান্য বলয়গুলোকে সাজাবো। সবমিলিয়ে আমাদের মোট সাতটি বলয় হবে। এখানে পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করতে পারে। তারা যাতে আনন্দ করতে, উপভোগ করতে পারে, খাবার খেতে পারে, এ ধরনের সকল সুযোগ-সুবিধা তারা পাবে। যাতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ঢাকায় এসে স্বাচ্ছন্দে আমাদের এই ঐতিহ্যের স্থাপনাগুলো উপভোগ করতে পারে, ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে তারা অনুধাবন করতে পারবে।’
এ সময় ৭টি ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টির পরিকল্পনা ও কর্মপন্থা নিয়ে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে ৫ নম্বর বলয় শুরু হবে। এটা আমাদের জাতীয় মন্দির এবং সারাবিশ্বেই ঢাকেশ্বরী মন্দিরের একটি খ্যাতি রয়েছে। এটার নান্দনিকতা রয়েছে, স্থাপত্যশৈলী রয়েছে। তার সাথে সাথে ধর্মীয় আকর্ষণও রয়েছে। সবমিলিয়ে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা। এরপরে রয়েছে লালবাগ কেল্লা। যেটি বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত স্বনামধন্য একটি স্থাপনা। এই লালবাগ কেল্লার অনেক অংশ ভেঙ্গে গেছে। সেগুলো কিভাবে সংস্কার করা যায় সেটাও এই বলয়ের আওতায় বিবেচনা করা হবে। এরপর আরেকটি বলয় হলো- আহসান মঞ্জিল কেন্দ্রিক। তারপর আরেকটি বলয় রুপলাল হাউজ কেন্দ্রিক, আরেকটি হলো বড় কাটরা ও ছোটকাটরা নিয়ে। এভাবে বিভিন্নভাবে সাতটি বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে। আজকে একটি বলয় দিয়ে শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে সব বলয় সৃষ্টি করা হবে। যেখানে একজন পর্যটক হেঁটে হেঁটে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টার মধ্যেই  সে সকল স্থাপনা উপভোগ করতে পারে।’
এ সময় সম্প্রতি ধানমন্ডিতে গাছ কাটা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাছ কাটা নিয়ে কেউ কেউ মর্মাহত হতেই পারেন, কষ্ট পেতেই পারেন। এটা তাদের আবেগের বিষয়। আবার অনেকেই ঢালাওভাবে অনেক কথা বলছেন। পূর্ণ তথ্য না নিয়েই কথা বলেন। আসলে উন্নয়ন কাজে অনেক সময় গাছ ফেলে দিতে হয়, কেটে ফেলতে হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তুতখনই করি, যখন নিতান্তই আর কোনো উপায় নেই। সুতরাং, যে গাছগুলোকে ফেলে দিতে হয়েছে বা কেটে ফেলতে হয়েছে সেই জায়গায় অবশ্যই অন্য গাছ লাগানো হবে। উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনে গাছ কাটতে হলে সেখানে নতুন করে তিনগুণ বেশি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি একটা গাছ অপসারিত হয় তাহলে সেখানে তিনটা গাছ লাগানোর লক্ষেই কাজ করছি। ওই সড়ক বিভাজনে আরও অনেক বেশি গাছ লাগানো হবে। এছাড়া আসন্ন বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার গাছ লাগাব। সুতরাং এটা আমাদের চলমান প্রক্রিয়া।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের মেয়র বলেন, বিগত ২ বছরের অধিক সময়ে প্রায় ২ লাখ গাছ রোপণ করা হয়েছে। আদি বুড়িগঙ্গায় প্রায় লক্ষাধিক গাছ লাগানো হবে। এছাড়া আমাদের খালগুলো নিয়ে যে প্রকল্প পাশ হয়েছে সেখানে লক্ষাধিক গাছ লাগানো হবে। সুতরাং ঢাকাকে সবুজ-শ্যামল করার জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। কোনো নগর পরিকল্পনাবিদের পরামর্শ ছাড়া গাছ কাটা হচ্ছে, এটা আসলে ঢালাওভাবে বলা। ঢাকাকে অবশ্যই একটি সুন্দর, সবুজ নগরীতে পরিণত করা হবে। 
ঐতিহ্য বলয় গড়ে তুলতে মেয়রের এ কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতা কামনা করে এ সময় খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, “‘আমাদের এখানে একটি ধারণা হচ্ছে — উন্নয়ন মানে বুঝি শুধু অট্টালিকা নির্মাণ। কিন্তু উন্নয়ন মানে হলো অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন। আমি এর আগে কোনো মেয়রকে দেখিনি যিনি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন নিয়ে আগ্রহী। এই প্রথম কোনো মেয়র হিসেবে ফজলে নূর তাপস আগ্রহ দেখিয়েছে। এই কাজে যদি আমরা সবাই সহযোগিতা করি এবং কাজটি সম্পূর্ণ করতে পারি, আমার মনে হয় ঢাকার ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর কাছে ফুটে ওঠবে।’
এর আগে মেয়র ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

Address

Registered Office: 44/1 North Dhanmondi (5th Floor) Kalabagan, Dhaka- 1205, Bangladesh Email: kalabaganbarta@gmail.com / admin@kalabaganbarta.com Telephone: +88-02-58154100 Editorial Office: Karim Tower 44/7-A&B, West Panthapath, Kalabagan, Dhaka-1205

Correspondences

USA: Mainul Haq (Atlanta) Kolkata: Sunirmal Chakraborty Mobile: +91-8017854521 Ashim Kumar Ghosh Address: 3D K.P Roy Lane, Tollygunge Phari Kolkata- 700 033, WB, India Mobile: +91-9874891187                                                                                                           S. M. Ashikur Rahman (Technical Adviser)
Author: Masud Karim © All rights reserved 2020. Kalabaganbarta

Design & Developed By: RTD IT ZONE