শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

ঢাকায় আকাশছোঁয়া ভবনঃ ট্রাই টাওয়ার

এম এমদাদুল ইসলাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১২৮ বার দর্শন

আকাশছোঁয়া ভবন এখন আভিজাত‍্য, জাতীয় উন্নয়ন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অর্জনেরও মাপকাটি। দুনিয়াজুড়ে এই ধরনের বহুতল অট্রালিকা নির্মাণের সংস্কৃতি শুরু হয় বিগত শতাব্দীর প্রথমাধ‍্য থেকে। জানা মতে-১৯৩০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম‍্যানহাটনে নির্মিত “দ‍্য ক্রাইসলার টাওয়ার”ই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন। সে থেকে অতঃপর বিশ্বজুড়ে বহুতল ভবন ও স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে। এর মধ‍্য বিশেষ করে এশিয়া ও মধ‍্য-প্রাচ‍্যর অনেক দেশে অনেকগুলো আকাশছোঁয়া ভবন ও স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সুউচ্চ ভবনবিষয়ক সংস্থা ‘কাউন্সিল অন টল বিল্ডিংস অ‍্যান্ড আরবান হ‍্যাবিটেট (CTBUH) এর মতে আমেরিকায় নাইন-ইলেভেনে টুইন টাওয়ারে হামলার পর আকাশছোঁয়া ভবন নির্মাণে ধীরগতি শুরু হয়েছে। যদিও সমসাময়িক সময়ে এর মধ‍্যে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে পেট্রোনাস টাওয়ার, আবুধাবীতে বুর্জ খলিফা টাওয়ারসহ বিভিন্ন দেশে আরো কিছু সুউচ্চ ভবন নির্মিত হয়েছে ও হচ্ছে এবং বর্তমানে সৌদি আরবের জেদ্দায়ও আর একটি অতি সুউচ্চ টাওয়ার নির্মিত হচ্ছে।

একেক দেশের আবহাওয়া, অবস্থান, লোকসংখ‍্যা ও প্রয়োজন একেক রকম। কিন্তু সুউচ্চ বা আকাশছোঁয়া ভবনগুলোর বেশীরভাগ প্রায় একি রকম। আর এই ক্ষেত্রে বেশীরভাগ দেশই যুক্তরাষ্ট্রের আদলে ও টেকনোলোজীতে বেশীরভাগ সুউচ্চভবন নির্মাণ করেছে। হালে চীনেই সবচেয়ে বেশী উঁচুভবন নির্মিত হয়েছে ও হচ্ছে। বিশ্বে ৯৮৪ ফুটের বেশী উঁচু ১১৫টি ভবনের মধ‍্যে চীন ইতিমধ‍্যে একাই নির্মাণ করেছে ৮৫টি। তবে করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক অবস্থা তথা পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ ও অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় চীন এই ক্ষেত্রে তার কৌশল কিছুটা পরিবর্তন করেছে। যেমন ২০২০ সালে চীনা সরকার আকাশচুম্বী ভবনের নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণবিধিতে কিছু বিশেষ বিধিনিষেধ জারী করেছে। চীনের যেসব অঞ্চলে জনসংখ‍্যা কম সেখানে ১৫০ মিটারের বেশী উঁচুভবন নির্মাণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

চীনে পাঁচটি আকাশছোঁয়া ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মি: স্মিথ বলেন- বিগত বছরগুলোতে চীন অনেক আবাসিক ভবন, অফিস ও স‍্যাটেলাইট শহর নির্মাণ করেছে, যার আসলে কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। হ‍্যাঁ, চীন সরকার বুঝতে পেরেছে যে, অর্থনৈতিক প্রয়োজন ও বিবেচনা মাথায় রেখে আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণ করতে হবে। আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণ করলে দেশের অর্থনীতি গতিশীল হয় না। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বদলিয়ে দিয়েছে শহুরে জীবন ব‍্যবস্থা। করোনার উপর্যুপরি সংক্রমণে ইদানিং অনেক বিশেষজ্ঞরাই মনে করেন যে, আকাশচুম্বী ভবনের কার্যালয়গুলোর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বদ্ধ পরিবেশে এই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন‍্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানরাও- সংক্রমণের প্রভাব কমাতে কম উচ্চতায় বা ভিন্নভাবে উঁচু ভবন নির্মাণের চিন্তে-ভাবনা শুরু করেছে।

কথা হলো- চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো যখন নিজেদের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত অবস্থা বিবেচনা করে আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণ নিয়ে নতুন করে গবেষণা করছে, তখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী রকম? ইহা লক্ষণীয় যে- রাজধানী ঢাকাতেতো বটেই, দেশের অপরাপর নগর/শহর ও পৌর এলাকায়ও দিনে দিনে উচুঁ ভবন ও স্থাপনার সংখ‍্যা বাড়ছে। ঢাকার মতিঝিলে ৩৭ তলা বিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার’ ও ৩৭ তলা বিশিষ্ট ‘হিলটন ঢাকা’, আর কুষ্টিয়ায় ৪০ তলা বিশিষ্ট BRB Cable Tower দেশের সবচেয়ে উঁচু ভবন। এনিয়ে আবার বোদ্ধামহলেও কথা হচ্ছে- আমাদের জনসংখ‍্যা ও আবহাওয়া অনুসারে দেশে উচুঁ বা সুউচ্চ ভবন নির্মাণ কতটা প্রয়োজন? আসলে চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো সেই অর্থে বাংলাদেশে এখনো কোন আকাশছোঁয়া ভবন নেই, যদিও কোন কোন প্রতিষ্ঠান ইতিমধ‍্যে রাজধানীর আশপাশে কিছু উচুঁ/সুউচ্চ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং আরো অনেকে চিন্তে-ভাবনা করছেন।

তবে বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের পক্ষে এখনো দেশের মধ‍্যে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করা সম্ভব না হলেও তারা বিদেশের মাটিতে সুউচ্চ ভবন নির্মাণের গবেষণা ও নির্মাণে অগ্রনী ভূমিকা রেখেছেন। যেমন বাংলাদেশেরই প্রকৌশলী ড. এফ আর খান ১৯৬৫ সালে উঁচুভবন তৈরির ইতিহাসে প্রথম ‘Tube Concept’ বা ‘Shear Walls’ তত্ত্ব দিয়ে বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। ইতিমধ‍্যে সেই বহুল-আলোচিত তত্ত্ব দিয়ে বিশ্বের অনেক নগরীতে অনেকগুলো আকাশছোঁয়া ভবন নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের আরেক স্বনামধন‍্য অধ‍্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ আরো অনেকে এই তত্বের উপর অধিকতর গবেষণা করেছেন এবং এখন আরো অনেক বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা বিশ্বের বিভিন্নস্থানে বহুতল ভবন নির্মাণের সাথে নানাহভাবে জড়িত।

সম্প্রতি বাংলাদেশের আরেকজন প্রকৌশলী ফিরোজ আলম এমন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন যে, যার মাধ‍্যমে নাকি এক কিলোমিটার পর্যন্ত সুউচ্চ ভবন তৈরি করা সম্ভব! তাঁর আকাশছোঁয়া উঁচুভবন নির্মাণের এই মন্ত্র অর্থাৎ ‘Parallel Shear Walls’-পদ্ধতিতে ‘ইনোভেটেভ কনসেপ্ট অন মেগা টল বিল্ডিংস’ নামে তিনি একটি বইও লিখেছেন। ইতিমধ‍্যে বিশ্বের নয়টি ভাষায় এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে এই বিষয়টির উপর আলাপ-আলোচনা চলছে। বাংলাদেশেও উঁচু ভবন নির্মাণে তাঁর এই বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে যে, ফিরোজ আলমের উদ্ভাবিত এই নতুন তত্ব দিয়ে অচিরে বিশ্বে সুউচ্চ ভবন নির্মাণে আরো চমক আসবে!!

আমাদের জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসারে দশ তলার উপরে গেলে সেটিকে বহুতল বা উচুঁ ভবন বলা হয়। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় প্রায়ক্ষেত্রেই এসব বহুতল ভবনগুলো নির্মিত হচ্ছে ঘনবসতি বা ঘিঞ্জি এলাকায়- যেখানে এসব ভবনগুলোর মূল পরিকল্পনামাফিক ও পরিবেশবান্ধব করে নির্মিত হচ্ছে না! একটি বহুতল ভবনের সাথে লাগোয়া আরেকটি বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে। যেমন পুরনো ঢাকার অলিগলিতেও এখন অনেকে পনের-বিশ তলাবিশিষ্ট উঁচুভবন নির্মাণ করে বসেছে ও এখনো নির্মিত হচ্ছে। তবে বিশাল জনসংখ‍্যার চাপে এখন নতুন ঢাকার অবস্থাও অনেক খারাপ হয়ে গেছে- বিভিন্ন পারিপার্শিক কারণে এখন সব জায়গায় বহুতল বা সুউচ্চ ভবন নির্মাণের অবস্থা ও পরিবেশ নেই। DAP এর প্রস্তাবনায়ও জনগনত্বের বিবেচনায় শহর অভ‍্যন্তরে আর বহুতল বা সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। তাই এখন কিছু প্রতিষ্ঠান বা ব‍্যবসায়ী গ্রুপ উচুঁ বা সুউচ্চ ভবনের নির্মাণের জন‍্য ঢাকা মহানগরীর বাহিরেই জমি খুজছে!

বাস্তবে ‘নতুন ঢাকা’ খ‍্যাত উত্তর ঢাকায়ও এখন বহুতল বা সুউচ্চ ভবন নির্মাণ সত‍্যিই জটিল হয়ে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো- অপরিকল্পিত নগরায়ন ও অবকাঠামোগত সমস‍্যা। একটি সুউচ্চ ভবন বা প্রকল্প গ্রহনের জন‍্য যে পরিমান জায়গা ও অবকাঠামো দরকার তা বর্তমান ঢাকার কোথাও নেই বলা যায়! তার মধ‍্যে রয়েছে তেজগাঁও ও কুর্মিটোলো বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের বিধি-নিষেধ। তাই এখন মতিঝিল, কাউরান বাজার, গুলশান এ‍্যভিনিউ ইত‍্যাদি পরিকল্পিত এলাকায় গায়ে গায়ে-লাগানো উচুঁ ভবনের ছড়াছড়ি। অথচ এর কোন একটি ভবনেই নেই পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের ব‍্যবস্থা। 

এই অবস্থায়, দেশে প্রথম এই ধরনের প্রথম ও আন্তর্জাতিক মানের একটা সুউচ্চ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে- পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে। যেখানে এই প্রকল্পটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে একটি স্মার্ট সিটি। তিনটি সুউচ্চ টাওয়ারকে কেন্দ্র করে থাকছে একটি নান্দনিক বিজনেস হাব, কনফারেন্স ও কনভেনশন সেন্টার, হাসপাতাল, স্কুলসহ উন্নতমানের আবাসন ও ট্রাফিক ম‍্যানেজমেন্টের ব‍্যবস্থা। এজন‍্য রাজউক ইতিমধ‍্যে পূর্বাচল প্রকল্পের ১৯ নং সেক্টরের CBD এলাকায় একশত একর জমিও বরাদ্দ করেছে

প্রথম দিকে এই প্রকল্পের আওতায় ১৪২ তলা বিশিষ্ট একটি আইকনিক টাওয়ার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় রানওয়েকে কেন্দ্র করে এই ট্রাই টাওয়ারের উচ্চতায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। এই প্রকল্পটির আওতায় থাকছে- ভাষা আন্দোলনের স্মরণে একটি ৫২ তলা, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে একটি ৭১ তলা এবং জাতির ঐতিহ‍্য (legacy) স্মরণে একটি ১১১ তলা বিশিষ্ট টাওয়ার। আর এই তিন টাওয়ারের চারিদিকে বিভিন্ন উচ্চতায় আলো অনেকগুলো ভবন নির্মিত হবে। 

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে – দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘শিকদার গ্রুপের’ সিস্টার কোম্পানি পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড এবং জাপানের কাজিমা কর্পোরেশনের যৌথ উদ‍্যোগে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের শেষ দিক থেকে এই প্রকল্পটি দৃশ্যমান হওয়া শুরু করবে। ভারতের  PriceWaters Corporation (PwC) প্রকল্পটির সম্ভাবতা যাচাই করে, আর দক্ষিণ কোরিয়ার নগর পরিকল্পনা ও স্থাপত‍্য প্রতিষ্টান Heerim Intl Ltd প্রকল্পটির মহাপরিকল্পনা প্রনয়ণ করে। প্রকল্পটির বিস্তারিত স্থাপতিক ডিজাইন প্রনয়ণ ও নির্মাণ মনিটরিং এর দায়িত্বে থাকবে যথাক্রমে থাইল‍্যান্ডের JRAI, আমেরিকার Skidmore, Owing & Merrill, জার্মানীর BAUER Corp, সিঙ্গাপুরের SURBANA Jurong, Archetype Holdings প্রমুখ প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটি কয়েকটি পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম পর্যায়ের নির্মাণের জন‍্য চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানী(CRCC) এর সঙ্গে অতি সম্প্রতি একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

বর্তমানে দেশের স্বনামধন‍্য অধ‍্যাপক ড. শামীম জেড বসুনিয়ার নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল এই প্রকল্পটির প্রস্তাবনা ও নকসা রিভিউয়ের কাজ করছেন। আমিও এই প্রকল্পটির সংশ্লিষ্ট কাজের (শিকদার গ্রুপের সাথে) সমন্ময়ক হিসেবে কাজ করছি। সত‍্যিকার অর্থে, এই প্রকল্পটির বাস্তবায়নের মাধ‍্যমে বাংলাদেশে আকাশছোঁয়া বা সুউচ্চ ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা, বাস্তবতা ও ভবিষ‍্যত স্থির হবে! তবে এটা ঠিক যে, আমাদের মতো দেশে বিশেষ করে অল্প জমিতে এত বিশাল মানুষের দেশে বহুতল বা উঁচু ভবন নির্মাণ করে কৃষি জমি ও জলাভূমি রক্ষার বিকল্প নেই।

লেখক প্রকৌশলী, পরকল্পনাবিদ

সাবেক প্রধান প্রকৌশলী, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

Address

Registered Office: 44/1 North Dhanmondi (5th Floor) Kalabagan, Dhaka- 1205, Bangladesh Email: kalabaganbarta@gmail.com / admin@kalabaganbarta.com Telephone: +88-02-58154100 Editorial Office: Karim Tower 44/7-A&B, West Panthapath, Kalabagan, Dhaka-1205

Correspondences

USA: Mainul Haq (Atlanta) Kolkata: Sunirmal Chakraborty Mobile: +91-8017854521 Ashim Kumar Ghosh Address: 3D K.P Roy Lane, Tollygunge Phari Kolkata- 700 033, WB, India Mobile: +91-9874891187                                                                                                           S. M. Ashikur Rahman (Technical Adviser)
Author: Masud Karim © All rights reserved 2020. Kalabaganbarta

Design & Developed By: RTD IT ZONE