রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিদ্যমান আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এটি পাস হলে রাজউকের কর্তৃপক্ষের সদস্য সংখ্যা দু্’জন বাড়বে। ভবন নির্মাণে অনিয়মের ক্ষেত্রে জরিমানা কয়েক গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে।
এ জন্য বিদ্যমান ‘টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৩-এ’ ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এটি ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২৩’ নামে পরিচিত হবে। বিদ্যমান আইনে একটি অধ্যায় ও ১৪টি সংজ্ঞা যুক্ত হচ্ছে এবং ৩১টি ধারা বাতিল করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের পাঁচ সদস্যের জায়গায় সাতজন করা হচ্ছে। নতুন আইনে ড্যাপ, বিএনবিসি (বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড), মোবাইল কোর্ট আইন ও জলাধার সংরক্ষণ আইন যুক্ত করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত এ আইন পাস হলে রাজউক চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কমপক্ষে দুই বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। সেই সঙ্গে চেয়ারম্যান পদটিও গ্রেড-১ পদমর্যাদার হবে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, একজন অতিরিক্ত সচিব রাজউক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান সচিব মর্যাদার। বর্তমানে রাজউকে একজন সদস্য প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগ দেখভাল করেন। নতুন আইনে প্রশাসন ও অর্থের দায়িত্ব দু’জন সদস্য পালন করবেন। এ ছাড়া এস্টেট ও ভূমি অনুবিভাগ বর্তমানে একজন সদস্য দেখলেও ভবিষ্যতে এখানে দু’জন দায়িত্ব পালন করবেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টিআই অ্যাক্টে বেশ কিছু পরিবর্তন এনে রাজউক আইন নামে করা হচ্ছে। ইংরেজির স্থলে মূলত বাংলায় হচ্ছে এ আইন। এতে নির্মাণ-সংক্রান্ত অনিয়মে জরিমানার পরিমাণ বাড়ছে।’
রাজউক সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত আইনের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ প্রায় ৩২ বছর আগে ১৯৯১ সালে আইনটির আংশিক সংশোধন করেছিল সরকার।
রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগরী গড়ার জন্য রাজধানীর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সমন্বয় করতে অনেক ক্ষেত্রে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। তাই নতুন আইনে মোট ৯টি অধ্যায়, ১০৮টি ধারা এবং ২৯টি সংজ্ঞা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি নতুন সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, প্রস্তাবিত আইনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এবং ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য সমন্বয় কমিটি গঠন করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। নতুনভাবে ভূমি পুনর্বিন্যাস সংযোজন করাসহ বিএনবিসির আলোকে ভবন নির্মাণ ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের বিষয় রাখা হয়েছে।
রাজউকের ভূমি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত বিস্তারিত ধারাগুলো ২০১৭ সালের স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইনের আলোকে আগেই বিলুপ্ত করা হয়। এগুলো বিদ্যমান ভূমি অধিগ্রহণ আইনের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে নতুন করে অ্যাকশন এরিয়া প্ল্যান এবং ভূমি পুনঃউন্নয়নের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে ধারা ৭৩-এর মাস্টারপ্ল্যান বর্তমান নগর পরিকল্পনার ধারণার সঙ্গে সমন্বয় করে কৌশলগত এবং বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা একত্র করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের বিবিধ বিষয়ও নতুন আইনে সমন্বয় করা হয়েছে। যেমন পুলিশের সহায়তা গ্রহণ ও জরিপের উদ্দেশ্যে প্রবেশ ক্ষমতা।
বিদ্যমান আইনে অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়গুলো বিচ্ছিন্নভাবে বিবিধ অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রস্তাবিত আইনে তা একত্র করা হয়েছে। শাস্তির ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। যেমন, ক্ষেত্রবিশেষে জরিমানা বিদ্যমান আইনে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার স্থলে ৫ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর বাইরে
মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯-এর বিষয়টিও এ আইনে রাখা হয়েছে।
Design & Developed By: RTD IT ZONE
Leave a Reply