মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৩ অপরাহ্ন

তানজিদ ও রিশাদের ব্যাটিংয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ৩৭ বার দর্শন

কনকাশন বদলি ওপেনার তানজিদ হাসানের হাফ-সেঞ্চুরির পর আট নম্বরে নামা রিশাদ হোসেনের ২৬৬ স্ট্রাইক রেটের টনের্ডো ইনিংসের সুবাদে শ্রীলংকার বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজ জিতলো স্বাগতিক বাংলাদেশ ক্রিকেট দল । আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলো বাংলাদেশ। 
এর আগে ২০২১ সালের মে’তে দু’দলের মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও শ্রীলংকাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। পাশাপাশি ২০২৩ সালের মে মাসের পর এবং তিনটি সিরিজ পর আবারও দ্বিপাক্ষীক সিরিজ জিতলো টাইগাররা।
সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে জানিথ লিয়ানাগের সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান করে শ্রীলংকা। জবাবে ফিল্ডিংয়ের সময় ইনজুরিতে পড়া সৌম্য সরকারের কনকাশন বদলি তানজিদের ৮৪ ও রিশাদের ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রানে ৫৮ বল বাকী থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে  বাংলাদেশ। 
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে বোলিং করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিশাঙ্কাকে ১ রানে লেগ বিফোর আউট করেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ।
চতুর্থ ওভারে শ্রীলংকা শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাসকিন। উইকেটরক্ষক মুশফিকুর  রহিমকে  ক্যাচ দিয়ে ৪ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন আরেক ওপেনার আবিস্কা ফার্নান্দো।
১৫ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ২৬ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। ১১তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৪ রান করা সামারাবিক্রমাকে শিকার করেন তিনি।
৪১ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর নতুন ব্যাটার চারিথ আসালঙ্কাকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কুশল। তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান স্পিনার রিশাদ হোসেন। ১৮তম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসে ২৯ রান করা কুশলকে শিকার করেন রিশাদ। জুটিতে ৪২ বলে ৩৩ রান যোগ করেন কুশল-আসালঙ্কা।  
এরপর পঞ্চম উইকেটে ৪৩ রান যোগ করে শ্রীলংকার রান ১শ পার করেন আসালঙ্কা ও লিয়ানাগে। উইকেটে সেট হওয়া আসালঙ্কা ৫টি চারে ৩৭ রান করে মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হন
আসালঙ্কার পর দুনিথ ওয়েলালাগেকে ১ ও হাসারাঙ্গা ডি সিলভাকে ১১ রানে থামিয়ে লংকানদের  চাপে মুখে ঠেলে দেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৫৪ রানে সপ্তম উইকেট হারায় লঙ্কানরা।  
চাপের মুখে এক প্রান্ত আগলে লড়াই করে ৬৫ বলে ওয়ানডেতে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লিয়ানাগে। অষ্টম উইকেটে মহেশ থিকশানার সাথে ৭৮ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৬০ রান যোগ করেন তিনি।  থিকশানা ১৫ রানে আউট হলেও, ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের নবম ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ১০১ বল খেলা লিয়ানাগে।
লিয়ানাগের সেঞ্চুরিতে সব উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৩৫ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০২ বলে অপরাজিত ১০১ রান করেন লিয়ানাগে। বাংলাদেশের তাসকিন ৪২ রানে ৩টি, মুস্তাফিজ ৩৯ রানে ও মিরাজ ৩৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
২৩৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশকে ৮ ওভারে ৫০ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও তানজিদ। পেসার প্রমোদ মদুশানের করা চতুর্থ ওভারে ১৫ এবং ষষ্ঠ ওভারে লাহিরু কুমারার বলে ১৩ রান নেন তানজিদ। 
অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন কুমারা। সাবধানে খেলতে থাকা বিজয় ২২ বলে ১২ রান করে আউট হন।  
এক ওভার পর আবারও বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন কুমারা। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে (১ ) ফেরান  তিনি। 
৫৬ রানে ২ উইকেট পতনের পর বড় জুটির চেষ্টা করেন তানজিদ ও তাওহিদ হৃদয়। এই জুটিতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ৫১ বল খেলা তানজিদ। ধীরে ধীরে হাফ-সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়া জুটিতে ভাঙ্গন ধরান কুমারা। ২২ রান করা হৃদয়কে নিজের তৃতীয় শিকার বানান তিনি। ৬৮ বলে ৪৯ রান যোগ করেন তানজিদ ও হৃদয়। 
দলীয় ১০৫ রানে হৃদয় ফেরার পর চাপ বাড়ে বাংলাদেশের। ১৭ রানের ব্যবধানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও তানজিদ আউট হন। মাহমুদুল্লাহকে ১ রানে কুমারা ও সেঞ্চুরির পথে থাকা তানজিদকে ৮৪ রানে আউট করেন হাসারাঙ্গা। ৮১ বল খেলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন তানজিদ। 
এরপর ব্যক্তিগত ২৫ রানে মিরাজ ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে আউট হলে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে বাংলাদেশ। কারন এ সময়  ৪ উইকেট নিয়ে ৫৮ রান দরকার পড়ে টাইগারদের। 
ষষ্ঠ উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সাথে মূল্যবান ৪৮ রান যোগ করেন মিরাজ। ৩৭তম ওভারে মিরাজ ব্যক্তিগত ২৫ রানে বিদায় নিলে ক্রিজে এসে নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বল থেকেই ঝড় তুলেন রিশাদ। হাসারাঙ্গার করা  ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন তিনি। 
৩৯ ওভার শেষে ২৭ রান দরকার পড়ে বাংলাদেশের। হাসারাঙ্গার করা ৪০তম ওভারে প্রথম দুই বলে ছক্কা এবং পরের তিন বলে তিনটি চারে ২৪ রান তুলে বাংলাদেশকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান রিশাদ। 
পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি দিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ ও সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় মুশফিক ৩৬ বলে অনবদ্য ৩৭ এবং রিশাদ ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৮ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। শ্রীলংকার কুমারা ৪টি উইকেট নেন। 
বল হাতে ১ উইকেট নেওয়ার পর আট নম্বরে নেমে টনের্ডো ইনিংস খেলার সুবাদে ম্যাচ সেরা হন রিশাদ। তিন ম্যাচে ১৬৩ রান করে সিরিজ সেরা হন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। 
আগামী ২২ মার্চ থেকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। 
স্কোর কার্ড : 
শ্রীলংকা : ২৩৫/১০, ৫০ ওভার (লিয়ানাগে ১০১*, আসালঙ্কা ৩৭, তাসকিন ৩/৪২)। 
বাংলাদেশ : ২৩৭/৬, ৪০.২ ওভার (তানজিদ ৮৪, রিশাদ ৪৮*, কুমারা ৪/৪৮)। 
ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী। 
ম্যাচ সেরা : রিশাদ হোসেন (বাংলাদেশ)। 
সিরিজ সেরা : নাজমুল হোসেন শান্ত (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলো বাংলাদেশ। 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

Address

Registered Office: 44/1 North Dhanmondi (5th Floor) Kalabagan, Dhaka- 1205, Bangladesh Email: kalabaganbarta@gmail.com / admin@kalabaganbarta.com Telephone: +88-02-58154100 Editorial Office: Karim Tower 44/7-A&B, West Panthapath, Kalabagan, Dhaka-1205

Correspondences

USA: Mainul Haq (Atlanta) Kolkata: Sunirmal Chakraborty Mobile: +91-8017854521 Ashim Kumar Ghosh Address: 3D K.P Roy Lane, Tollygunge Phari Kolkata- 700 033, WB, India Mobile: +91-9874891187                                                                                                           S. M. Ashikur Rahman (Technical Adviser)
Author: Masud Karim © All rights reserved 2020. Kalabaganbarta

Design & Developed By: RTD IT ZONE